যুদ্ধবিরতির চুক্তি করেছে হামাস ও ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) স্থানীয় সময় সকাল ১০ টা থেকে গাজায় অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।

কাতারের মধ্যস্থতায় জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৪ দিনের জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ।
হামাস ও ইসরায়েলের এ চুক্তিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ। একই সঙ্গে গাজায় যুদ্ধ ও বোমাবর্ষণ থামানো এবং ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে জিম্মিদের মুক্ত করতে আরও অনেক কিছু করা দরকার বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরাইল ও হামাসের সমঝোতাকে স্বাগত জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও। তার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজায় ফিলিস্তিনিদের চাহিদা দূর করার জন্য এই বিরতি সম্পূর্ণ ব্যবহার করা উচিত। এটি সঠিক দিকের একটি পদক্ষেপ। তবে আরও অনেক কিছু করা দরকার।

আল জাজিরা জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগঠন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরো সদস্য মুসা আবু মারজুক যুদ্ধবিরতির তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গাজা উপত্যকায় সব অঞ্চলে এ যুদ্ধবিরতি হবে। আগামীকাল সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গাজায় কোনো যুদ্ধবিমান বা সামরিক যান চলাচল করবে না। এ ছাড়া ইসরায়েলি সেনারা গাজার কোনো বেসামরিক নাগরিককে আটক করতে পারবে না।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, চুক্তি হওয়া মানে যুদ্ধ বন্ধ হবে না, তা নয়।

খবরে বলা হয়েছে, বুধবার কাতারের মধ্যস্থতায় ৫০ জন জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় চারদিনের জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুমোদন করেছে ইসরায়েল। হামাস বলছে, ৫০ জিম্মির বিনিময়ে কারাবন্দি ১৫০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। তাদের সবাই নারী ও শিশু। সেই সাথে শতাধিক ত্রাণবাহী ট্রাককে রাফাহ সীমান্ত থেকে গাজায় আসতে দিতে হবে। প্রতি ১০ জন অতিরিক্ত জিম্মি মুক্তির জন্য যুদ্ধবিরতি একদিন করে বাড়ানো হবে।

এক মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামাস যে ৫০ জনকে মুক্তি দেবে তাদের মধ্যে চার বছর বয়সী এক শিশুসহ তিন মার্কিন নাগরিক রয়েছে।

কাতারের মধ্যস্থতায় সাত সপ্তাহ হতে চলা ‘নৃশংস’ একটি যুদ্ধের প্রথম বিরতি হচ্ছে বৃহস্পতিবার। ধারণা করা হচ্ছে, এ যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের দুর্ভোগ অল্প হলেও নিরসন হবে।

এদিকে লেবানিজ সংগঠন হিজবুল্লাহর একটি সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, হামাস-ইসরায়েলের চুক্তির অংশ নয় তারা। যুদ্ধবিরতি চলাকালীন দক্ষিণ লেবানন বা গাজায় ইসরায়েলি যেকোনো উত্তেজনা তারা মোকাবিলা করবে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে গাজায় এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ১০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি মারা গেছে। আর হিজবুল্লাহ-ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে যথাক্রমে ৭০ ও দশজনের মৃত্যু হয়েছে।